মাচা
-ফজলে এলাহি মুজাহিদ
পূর্বপুরুষেরা বেঁধেছিল এই মাচা
ফলিয়েছে টাটকা ফসল; গড়ছিল সোনালী মৌসুম।
ভষ্মিত পাথুরে ভূমিতে কর্ষণে কর্ষণে
বাগানের সেরা সেরা বৃক্ষকে খুঁটি করে;
খেজুরী আঁশের পাকানো রশির কাঠিন্যে
জুড়েছিল আশংকিত প্রতিটি বন্ধন!
ঝড়ের ঝাপটা মহীরূহ শুইয়ে দিত
ভূ-কম্পন শীসার খনিতে আন্দোলন ঘটাত
আগ্নেয়গিরি লাভার ঢালাই সম্পন্ন করত
রৌদ্র-খরা আর বন্যা-জলোচ্ছাসে
তটের পটভূমি বিরান হত,
লড়াইয়ের পর এল গেল মহা মহা লড়াই
দূর্ভিক্ষ, মহামারী, জলবায়ুর উষ্ণ-শীতলতা;
কোন কিছুই পারেনি সাধিতে
পূর্বপুরুষের নির্মিত মাচাতে
কাঠামোতে নূয়ে পড়া কিংবা বন্ধনে শীথিলতা।
উত্তর প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের পর এই আমি
প্রতিষ্ঠিত মাচার পরিচর্যায় কতই না অযোগ্য;
আমার বুননী বীজে পোকার বংশধর
চারায় চারায় সবুজের অভাবে বিবর্ণ ধূসরতা
আয়েশী ছায়ায় কিরণ পারেনা ঘটাতে সংশ্লেষণ
লতানো শরীর খুঁজে পায় নাকো উন্নত আশ্রয়
ফুলেল বসন্তে, আষাঢ়ীয় জলে, শরতীয় পূর্ণতা
ফসলী হেমন্তকে পারে এখানে ছুঁতে।
আমাদেরি অযোগ্য অলসতায়
পাতায় পাতায় পোকাদের কারুকাজ
এখানে খাবলে, ওখানে খুঁটিয়ে, সেখানে হজম করে
নির্মমতায় লুণ্ঠিছে আমার মাচাময় পৃথিবীকে।
'শেকড়ই শক্তি'-একথা বুঝেনা মালী
অবুঝে, অখোঁজে, অযতনে গেল কত ফসলের ডালী,
ক্ষমা কর প্রভু আর শক্তিতে কর বলীয়ান
শেকড়ী বাঁধনে গ্রন্থিত কর, দূর কর ব্যবধান।
২৪.০৫.২০০৭
মদীনা মুনওয়ারা, সৌদি আরব।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞ যেখানে।
|