কবিতা অথবা খসখসে অনুভব
-ফজলে এলাহি মুজাহিদ
মগজের অলিগলি খুঁজে জড়ো করলাম
চিন্তার দালান কোঠা থেকে নিয়ে ছেঁড়া কাগজ
খোঁড়া বিড়ালটা পর্যন্ত, বাদ পড়েনি
গাছের ভাঙ্গা ডালটিও, এমনকি বিড়ির দোকানের জ্বলন্ত দড়ি
ভাগ বসাতে হবে আজ; কলা পাতাও তাই
ভাগ্যিস চিন্তার গবাদিকে জবাই করার প্রয়োজন নেই
নেই দরকার দুদকের ভাড়া করা বুলডোজার
কঠিনেরা এখানে বিভক্ত হয় ইচ্ছায়, চিন্তায়
আমি শুধু দেখতে চাই মানুষ হিসেবে 'আমি কতটা কার?'
প্রথমে বসাই বিশ্বাসী 'এক কথার ভাগ'
সেখানে আমি স্রষ্টাকে ছাড়া আর কাউকে পাইনি
অথচ যেই না বিছালাম 'রোজগারী' থেকে 'সন্তানাকাংখা'
কোথাও পদস্থ কর্মকর্তা, কোথাও মাজারের কাল্পনিক পীর
কোথাও মৃতদেহ, কোথাও দাম্ভিক বাহুদ্বয়
বিভ্রান্ত আমি 'এক কথা'য়ও বহুধা ব্যবচ্ছেদ!
দৃষ্টির তথ্যাবলীকে এসিডে ধুয়ে নিলাম
যদি পাই নিরংকুশ কিছু এই ভাগে
বিস্ফোরিত পাতার ফাঁকে কিছু হেরফের যে লুকিয়ে
কোথায়? কোন্ ভাগে বসাবো আমি তারে?
সেখানে টিয়া পাখি আর বানর আমার ভাগ্য নিয়ন্তা
অথবা লেজ খসাদের একজন হয়ত
দৃষ্টি আমায় বারণ করে বিশ্বাসী হতে!
জীবনকে টেনেটুনে মানচিত্রের মত মেলে ধরলাম
সবটুকুর নাম দিয়েছি যদিও 'মুসলিম'
মসজিদ আর ভোরের মুষ্ঠি চালের মক্তবের সীমাতেই শুধু
রান্নাঘর থেকে সংসদ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ পথের বাঁকে বাঁকে
ফলকেরা উঁচু হয়ে জানিয়ে যায়- 'ধর্মনিরপেক্ষ'
কানে কানে বলে- 'তুমিই ধর্মহীন', 'মুখোশী'!
অনেকগুলো রঙধনু দেখে পুলকিত হলাম
ঝটপট কলা পাতা উল্টিয়ে কাঠিটা নিলাম তুলে
তুলি ভেবেই আঁকতে গেলাম আচরিত প্রচ্ছদ;
দু'ঈদে মিষ্টার্ন আর গোশতের স্বাদীয় ধোঁয়া
নব নব অশ্রু বিলাস, কল্পিত তীর্থ অথবা ওরশের শির্নী।
পটের বিবর্ণ বাকী বিস্তারে কেবলি ধার করা জীবনাচার
থমকানো বিরাম চিহ্নে দেখি 'সেকেলে' শব্দটি বার বার
আমি তখনো ঠিক মেলাতে পারিনি আমি আসলে কার?
জড়ো করা বিশ্বাস আর চেতনার স্তুপে
গেঁড়ে দিলাম ছোট্ট এক ফলক
যেখানে লেখা-
ইতিহাসের পরিসংখ্যানে তুমি আদর্শ-রূপ
নিজস্ব বিবরণে তুমি সম্মিলিত এক স্তুপ!
০৫.০৮.২০০৭
মদীনা মুনাওয়ারা, সৌদি আরব।
|