জীবন জোড়া অপেক্ষা
-ফজলে এলাহি মুজাহিদ
নিলুয়া-ঝরোকায় দেখি ঝুলানো ফাল্গুনী
শাড়ী দোলে মাচায় মাচায়;
ছোট্ট জামার আড়ালে লুকানো অন্তর
নব নব স্বপ্ন সাজায়।
বাবা তুমি আসবে ক'বে জানাও না এবার
আমি যে কত্ত বড় হয়েছি দেখবেনা একবার?
দাদী বলেছিলঃ
তখনো আশ্বিনের ভাটাইয়া দিন ছিল
ওরা স'বে মিলে বয়ে আনলো সাদা কাপড়ের দলা
বললো সকলেঃ
এখানে তোমার বাবা! অন্তর জুড়ে কত কথা না বলা।
বাবা তুমি আগেও তো এসেছিলে
ওরা স'বে তখন কোথায় ছিল?
আজ কেন এত ভীড় ঠেলে ঠেলে
অনেক কষ্টে তোমায় দেখতে দিল।
নিরবে একটু গল্প শোনাতে দেবে না বুঝি আমায়
তুমি না বাবা এত্ত ঘুমোতে পারো
এবার উঠোতো, এদেরে তাড়াও গল্প শুনবো অনেক
উঠোনা এবার; নইলে কিন্তু বায়না ধরবো আরো।
কথা বলো বাবা; ওরা কেন তোমার নাকে
তুলা গুঁজিয়ে দিয়েছে?
দেখে আমার দারুন পাচ্ছে হাসি
সাদা চাদরে মুড়িয়ে দিয়েছে; এখনো কি শীত পড়েছে?
সকলে আমায় থাকতে দিল না তোমার কাছাকাছি
এত আয়োজনে, এত সশব্দেও ঘুম কেন ভাঙ্গেনাই?
যেভাবে আনলো সেভাবে আবার নিয়ে গেলা অজানায়
পাড়ার দুষ্টোগুলো বলেঃ তুমি নাকি বেঁচে নেই!
অথচ আম্মু বলছেঃ না, তুমি আজো আছো জীবিত;
যদি তাই হবে তবে আসছো না কেন এতদিনে।
বুঝি শুধু তুমিই শুনতে পাও না;
ভোরের সূর্য; সাঁঝের তারারা আমার কান্না শোনে।
--আমি এখন বুঝি তোমায়; আসবে না কোনদিন
অনেক সাক্ষী নিদারুন এ সাক্ষ্য দিয়েছেন;
আল্লাহর পথে শহীদ তুমি; কিন্তু কি অপরাধে?
জবাবে আম্মু সিক্ত বদনে তিলাওয়াত করেছেনঃ
[গাঢ়]" ওরা তো শুধু এ কারণেই করেছিল
নির্যাতন তাদের উপর;
কারণ, তারা বিশ্বাস করত পরাক্রমশালী
এবং প্রশংসার যোগ্য আল্লাহর উপর।"[/গাঢ়]
[সূরা আল-বুরূজঃ ৮]
০৪.০৩.২০০৭
মদীনা মুনওয়ারা, সৌদি আরব।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞ যেখানে।
|