Try to Live till Live the World
  বৈকালিক প্রসন্ন তিথি
 

বৈকালিক প্রসন্ন তিথি

-ফজলে এলাহি মুজাহিদ


বৈকালিক প্রসন্নতায় মনে হয় পরশুটা যেমনি হোক; আজকালটা তো বেশ যাচ্ছে। নিমগ্ন অন্ধকারের বুকে একফালি চাঁদ যেন এ জীবন, যদি আশপাশ জুড়ে থাকে রাশি রাশি তারকার মেলা, তবে কারই বা হারিয়ে যাওয়ার সাধ জাগবে? ধারাগুলো সব যেন উল্টে গেল, এখানে রাতগুলো দিন আর দিনের শুরুটা যেন সাঁঝবেলা; কিন্তু তা শুধু আমার বেলাতেই।

রাতজাগার প্রারম্ভটা তো ছিল সে-ই স্কুলবেলার বার্ষিক পরীক্ষার প্রাক্কালে। যখন পল্লীর কবি জসীম উদ্দিনের "পল্লী জননী" কবিতার সেই পল্লীচিত্র ভোররাতের নিঝুম অন্ধকার আর কনকনে শীতের আবেশে মুখস্থ করতাম, তখন মনে হতো যেন সে-ই ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক গলে আর আমার টিনের ঘরের খোলা জানালা বেয়ে নাকে আসছে কবিতার এঁদো ডোবার গন্ধ। তখন মাঝে মাঝে থুথুও ফেলতাম, ভয় ভয় করতো, আমার কেরোসিনের হারিকেনটাই যেন সেই দুঃখিনী মায়ের নিবু নিবু কুপি। এভাবেই ফুটে উঠতো ভোরের আলো, মুছে যেত মনের সকল কালিমা, চেয়ার ছেড়ে ঝেড়ে উঠতাম জীবনের একটি নতুন ভোরে।

তারপর সময়ের তালে তালে রাতজাগা হয়ে পরিবর্তন হয়ে গেল আড্ডায়। কি দুই কি তিন কখনো ভোর অবধি চলতো বন্ধুদের সাথে গল্পাড্ডাগুলো। বয়সী সেকেলে বিষয়গুলো যে কি থাকতো, সে অবশ্য পরিসরে এ কলামে না লিখলেও কিছুমাত্র কমে যাবে না নিশ্চয়।

বাস্তবতার টানাপোড়নেই এখন দিনরাতের ব্যবধান পরবির্তনশীল। বিকেল পাঁচটা থেকে নিয়ে রাত বারো অথবা সাড়ে পর্যন্ত চলতে থাকা কর্মসময়ের শেষে যখন ফিরে আসি তখন রাতটাকেই মনে হয় বিকেল, কিছু বিশ্রাম, কিছু আড্ডার সময়; এভাবেই পেয়ে যাই ভোরের আলিঙ্গন। আজকাল বন্ধু হয়ে গেল কম্পিউটার নামক যন্ত্রটি, তার সাথে চলে সমস্ত আড্ডা, তার মাধ্যমেই পরিচয় আরসব পরিচিত-প্রিয়জনদের সাথে, তার 'তার'-য়েই কথা হয় হৃদয়াংশসমূহের সাথে আলাপন। এই তো এখন দিনরাতের পরিবর্তনের বহতা। বিকেল যেন শেষ রাত, ঘুম ভেঙ্গে সিজ্দার সমাপনে মেলে কি এক অপার্থিব প্রসন্নতা; তাই যেন দিনের এক বিশাল পাওয়া।

০২.০১.২০০৬, মদীনা মুনওয়ারা, সৌদি আরব।

ছবির জন্য কৃতজ্ঞ যেখানে।

 
  Today, there have been 1 visitors (3 hits) on this page!  
 
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free